বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি জানুন
বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা কি তা আমরা কম বেশি সবাই জানি পৃথিবীতে সবচেয়ে নিরীহ ও আদরের প্রাণী হিসেবে আমরা বিড়ালকে জানি। পছন্দ করেনা এমন মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন । বসতবাড়ি বা তার আশেপাশ সকল জায়গায় আমরা বিড়াল দেখে থাকি, শুধু দেখে থাকি বললে ভুল হবে কেননা সে মানুষের খুব কাছাকাছি থাকে যার কারণে আমরা বিড়ালকে ভালোবাসি।
তবে প্রত্যেকটা প্রাণীর যেমন উপকারী দিক রয়েছে ঠিক তেমনি অপকারিতা রয়েছে । অনেকে বিড়াল পছন্দ করেন ধর্ম কিংবা বিজ্ঞান যে দিক থেকে বিবেচনা করা হোক না কেন, বিড়ালের উপকারিতা সংক্রান্ত বিষয় সমূহ অনেকেরই জানা রয়েছে। পৃথিবীতে যা কিছুর উপকারিতা রয়েছে তার ঠিক কোনো না কোনো অপকারিতা দিক রয়েছে আজ আমরা জানবো বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
বিড়ালের বৈশিষ্ট্য
পেজ সূচিপত্রঃবিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা, মানুষের সবচেয়ে আদরের এবং কাছাকাছি পালিত প্রাণী মধ্যে বিড়ালের স্থান দ্বিতীয় । শান্ত স্বভাবের এবং ভালোবাসা প্রবন আর যার কারণে বিড়াল মানুষের খুব তাড়াতাড়ি আপনজন হয়ে যাই যার কারণে বিশ্বের প্রায় সকল দেশের বিড়াল পালন করা হয়ে থাকে আর এই বিড়াল লালন পালন করলে মানুষের মন এবং শরীর দুটো ভালো রাখে।
বিড়াল একটি শান্ত স্বভাবের প্রাণী, বিড়ালের তীক্ষ্ণ দাঁত রয়েছে এছাড়া এদের মাথার খুলি ছোট থেকে মাঝারি ধরনের হয়ে থাকে। গায়ের পশম বা লোম নরম তুলতুল হয়ে থাকে, এদের ডাক কয়েক রকম হয়েও থাকে এদের যে চারটি হাত-পা রয়েছে সামনে দুটি ও পিছনে দুইটি যথাক্রমে চারটি করে নখ হয়ে থাকে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল বিড়ালের প্রখর বা শ্রবণ শক্তি মধ্যে রয়েছে তাদের ঘ্রাণ শক্তি।
বিড়াল মূলত বসন্ত থেকে শরৎকাল এর মাঝামাঝি সময়ে বাচ্চা প্রসব করে থাকে। এদের প্রসবকালে বাচ্চা সংখ্যা বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যেমনঃ- কখনো দুইটি চারটি আবার পাঁচটি ও হয়ে থাকে। বিড়ালের ওজন দুই থেকে চার পাঁচ কেজি এর মধ্যে হয়ে থাকে । বিড়ালের দৈহিক গঠন মাঝারি আকৃতি হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে পুরুষ বিড়ালের চেয়ে স্ত্রী বিড়ালের ওজন কম হয়ে থাকে।
বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম কি বলে
আমরা জানি ইসলাম ধর্ম বিড়াল পালনের কোন প্রকার বিধি নিষেধ নেই। তবে বিড়াল পালন করতে হলে সে ক্ষেত্রে বিড়ালের পর্যাপ্ত যত্ন নিতে হবে খাদ্য পানীয় সরবরাহ করতে হবে বিড়ালের প্রতি দয়ালু অনুগ্রহ দেখাতে হবে। বিড়ালকে কোন ধরনের কষ্ট দেওয়া যাবে না তবে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে যাতে বিড়াল কোথাও নোংরা বা অপবিত্রতা করে রাখলে তা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
বিড়ালের ওপর কোন ধরনের অত্যাচার বা অবিচার করা গুনাহ হবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে:-
এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য আজাব দেওয়া হয়েছে। কারণ বিড়ালটিকে আটকে রাখায় সেটি মারা গিয়েছিল। ফলে সে জাহান্নামে গেছে। বিড়ালটিকে সে আটকে রাখা অবস্থায় কোন প্রকার খাবার পানিও দেয়নি। আবার ছেড়েও দেয়নি যাতে করে জমিনে পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে।’’
আরো পড়ুনঃট্যুর এন্ড ট্রাভেলস ব্যবসা করার কয়েকটি উপায়
বিড়ালের গড় আয়ু কত জানুন
আমরা জানি বিড়াল খুব একটা বেশি দিন বাঁচে না। তবে এদের গড় আয়ু সাধারণত ১৩ থেকে ১৪ বছর হয়ে থাকে। তবে এদেরকে যদি ভালো মতো লালন পালন করা হয় সঠিক মতো এদের চিকিৎসা করানো হয়ে থাকে এবং এদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয় তাহলে ১৫ বছর পর্যন্ত এরা বাঁচতে পারে। কোনও কোনও বিড়াল তার চেয়ে বেশি বাঁচতে পারে তবে তা খুবই বিরল।
একটি বিড়াল দিনে কত ঘন্টা ঘুমায়?
বিড়াল ভয়াবহ রকম একটি অলস প্রাণী। আমরা জানি প্রত্যেকটা প্রাণীর নির্দিষ্ট একটি ঘুমানোর সময় রয়েছে। এটা পানি বেঁধে বিভিন্ন সময় হয়ে থাকে। জার্মানির জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি গবেষক- স্কট ক্যাম্বেল আইরিন ও টবলার তাদের এক গবেষণায় দেখান গৃহপালিত বিড়ালগুলো প্রতিদিন সাধারণত ১০ থেকে ১৩ ঘন্টা ঘুমায় এমনকি এরা দিনে ১৭ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমাতে পারে।
বিড়াল কেনাবেচা কি হারাম?
কিছুটা আরাম প্রিয় আয়েশী ধরনের গৃহপালিত প্রাণী। যা সহজে পৌষ মানে বর্তমান সময়ে এসে বিড়ালের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে শখ করে অনেকেই বিড়াল পোষেন কেউ আবার অন্যের কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনে বিড়াল পোষেন। হাদিসে বিড়াল বেচাকেনা না করতে উৎসাহীত করা হয়েছে এবং এটি নাজায়েজ বলা হয়েছে।
আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম রহ. বিড়াল বেচাকেনা বিষয়ে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি আরো বলেছেন এটাই সঠিক অভিমত। কারণ এ বিষয়ে সহীহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে এবং এর বিপরীতে কোন হাদিস নেই সুতরাং এ কথাই বলা হয় আবশ্যক।
এছাড়াও সৌদি আরবের স্থায়ী ফাতেহা বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিড়াল, বানর, কুকুর, ইত্যাদি লম্বা দাঁত বিশিষ্ট প্রাণী বিক্রি করা নিষেধ। কারণ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ও সতর্কবাণী বর্ণিত হয়েছে তাছাড়া এটি অর্থ সম্পদ নষ্ট করার অন্তর্ভুক্ত।
আরো পড়ুনঃ২০২৪ সালে অনলাইনে ইনকাম করার কয়েকটি সেরা উপায়
বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি তা নিচে বর্ণনা করা হলোঃ-
বিড়ালের উপকারিতা
- ঘুম ভালো হয়
- একাকীত্ব দূর করে
- স্নায়বিক ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু দিকে থেরাপি হিসেবে কাজ করে
- দায়িত্বশীল এবং যত্নশীল হতে সাহায্য করে
- উচ্চ রক্তচাপের জন্য বিড়াল পালন একটি উত্তম মাধ্যম
- ঘরের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ দূর করা
- প্রধান কারণ হচ্ছে ঘর থেকে ইঁদুর তাড়ায়
- বিড়াল বসলে মানসিক চাপ কমে যায়
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমে
- বিড়ালের ডাক সবচেয়ে সুন্দর ধনী গুলোর একটি
- যখন কেউ বিড়ালের সঙ্গে সময় কাটায় তখন তাদের দেহে প্রশান্তি ও আরামদায়ক একটা ভাব আসে
- ২০০২ সালে ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে এক বছরের নিচে যেসব শিশু বিড়ালের প্রেমে মগ্ন থাকে তাদের বিভিন্ন ধরনের এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- ২০০৮ সালের এক গবেষণা অনুসারে দেখা গেছে কুড়ের তুলনায় বিড়াল অনেক কম খাবার খায়।
বিড়াল প্রেমীরা যেসব কারণে সতর্ক হবেন
বিড়াল খাবারে মুখ দিলে তা খাওয়া যাবে কি?
বিড়ালের লোমে যেসব ক্ষতি হতে পারে
বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি কোন ক্ষতি হয়
বিড়াল কামড়ালে কি ভ্যাকসিন নিতে হবে
বিড়াল আদরের প্রাণী হলেও কিছু কিছু সময় এদের আঁচড়ে বা কামড়ে অনেক ধরনের বিষ থাকে। সেক্ষেত্রে আমাদের যেসব কাজ করতে হবে সেগুলো হলো যদি আঁচড় দেয় তাহলে ভালো ভাবে স্যাভলন অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা সাবানের পানি ইত্যাদি দিয়ে ভালো মতো ধুয়ে নিতে হবে।
যেহেতু বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটি দিক রয়েছে সেক্ষেত্রে আমাদেরকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।কোন কোন সময় দেখা যায় যে ক্ষতস্থানটি অনেক বেশি আকারের হয়ে থাকে অথবা কামড়ের ফলে দাঁতগুলো মাংসপেশিত বসে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায় যে, বিড়াল আদরের প্রাণী হলেও এর বিভিন্ন উপকারী অপকারী দুইটাই দিক রয়েছে যার কারণে আমরা সবাই পছন্দ করি। তবে বলা বাহুল্য যে একটি বিড়ালের উপকারী দিকটা অনেক বেশি। আমরা আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি যে বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা দিকগুলো কি কি তার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url